সূর্যের আলোয় ঝকঝক করছিল ধারালো অস্ত্রগুলো, দল বেঁধে তারা এগিয়ে যাচ্ছিল ভিন্নধর্মীদের সন্ধানে। ঢেউয়ের মত আছড়ে পড়ল তারা দোতলা বাড়িটার দরজায়। বাড়ির ভেতর থেকে কান্নার রোল উঠল।
উল্লাসের সঙ্গে ধর্মের নামে জয়ধ্বনি দিতে দিতে দলটা কিছু সময় পরে বাড়িটা থেকে বেরিয়ে গেল আরও একটা বাড়ির সন্ধানে। এখন আর কোন আর্তনাদ, কাতরানি, কান্না, অনুনয় কিছুই নেই। রক্তের ধারায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষত বিক্ষত দেহগুলোয় প্রাণ নেই। পুরুষ তো বটেই, শিশুরাও রেহাই পায়নি, আর মহিলারা? প্রাণ বা মান কোনটাই তাদের বাঁচেনি।
কত শত বছর হয়ে গেল এই অন্ধকার পাতালপুরীতে যক্ষ হয়ে পাহারা দিয়ে যাচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদে ভরা কলসীগুলোকে। উপযুক্ত ব্যক্তিকে এই মহামূল্যবান সম্পদ হস্তান্তর করতে হবে। আজ অবধি কেউ আসেনি এই সম্পদের সন্ধানে।
ক্ষিধেয়, অসুস্থতায় অজ্ঞান হয়ে পথের ধারে পড়ে থাকা বৃদ্ধা জ্ঞান ফিরতে জানিয়েছিলেন তাঁর আপন সন্তান তাঁকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।
সুড়ঙ্গ বেয়ে ক্রমেই আরো নীচে নেমে যাচ্ছিল পাঁচজনের দলটা। তারা শুনেছে সেই অমূল্য সম্পদে ভরা কলসীগুলোর কথা। গল্প শুনেছে বহুবারের ব্যর্থ অভিযানের। কেউই আজ অবধি পৌঁছতে পারেনি ওই গুপ্ত সম্পদের কাছাকাছি। এতদিন যাইই হয়ে থাক এখন এই সম্পদ উদ্ধার করতেই হবে যে করেই হোক। এই সম্পদ উদ্ধার না করতে পারলে সমূহ বিপদ। পৃথিবী আজ সম্পদশূণ্য।
সুড়ঙ্গের শেষে পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারা এগিয়ে গেল কলসীগুলোর দিকে। কলসীতে হাত দেওয়ার আগেই সেই পাতালগুহা কেঁপে উঠল বিকট অট্টহাসিতে। দলপতি কোনরকমে সাহস সঞ্চয় করে সামনে দাঁড়ান বিশালদেহী যখকে বোঝাতে লাগল কেন তাদের এ সম্পদ দরকার এখনি। সব শুনে বিস্ময়ে, লজ্জায়, দুঃখে যক্ষ ধূলো হয়ে ঝরে পড়া মাত্র তারা একে একে ভালবাসা, মমতা, কর্তব্যবোধ, সহিষ্ণুতা, মানবিকতায় ভরা কলসীগুলো তুলে নিল।
Abar porlam..abar valo laglo..