Home গল্প ব্রেন ডেথ

ব্রেন ডেথ

396
0

ব্রেন ডেথ

আজ বড্ড বেশি কুয়াশা পড়েছে। যদিও কার্শিয়াঙে শীত কালে, বিশেষতঃ ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে যেমন জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ে তেমনই পাহাড়ের প্রতিটা খাঁজ ঢেকে যায় কুয়াশার চাদরে। হাত ধরে একই সাথে হেটে চলা পাশের মানুষটিকে অব্দি স্পষ্ট দেখা যায় না! ফলে রাস্তায় যখন তখন দুর্ঘটনা ঘটার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। চলন্ত গাড়ির সামনে বা অপরিচিত রাস্তায়, হঠাৎ খাদের কাছে চলে আসা আশ্চর্যের না। ভোরের দিকে তো তাই সাধারণত কেউ বাইরে বেরোয় না।

গোপাল তামাং নামের এক নেপালী যুবক দ্রুত বাড়িটির বাগান পেরিয়ে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়। একবার চারিদিকটা দেখার চেষ্টা করে যদিও কিছুই দেখা যায় না। ঠান্ডায় শরীরের হাড়গুলোতেও কম্পন ধরেছে। কিন্তু এটাই সঠিক সময়। পাঁচ মিনিটের পায়ে হাটা পথ। এরপরই সে নিজের গন্তব্যে পৌঁছে যাবে। গত রাতে যেমন কেউ তাকে আসতে দেখেনি তেমনই ফিরে যেতেও কেউ দেখবে না। এই দুই মাস সে ওই গোলাপী ফুলের মধু নিংড়ে নিংড়ে খাবে এরপর তাকে ছুড়ে ফেলে দেবে। আবার যখন ইচ্ছেগুলো মাথা চারা দিয়ে উঠবে তখন নতুন শিকার খুঁজতে হবে তার। এসব ভাবতে ভাবতে গোপাল দ্রুত অথচ সন্তর্পণে নিজের বাড়ির দিকে পা চালায়। কিছুটা যেতেই হঠাৎ একটা মানুষের সাথে ধাক্কা খায়। গলার কাছে মনে হয় কিসের যেন হালকা কামড় অনুভূত হল! পিঁপড়ে কামড়ালে যেমন হয় তেমন।

“কে! কে?”

বলে হাতের মোবাইলের ফ্ল্যাশ লাইটটা জ্বালাল ঠিকই কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না। শুধু মনে হল, একটা ছায়া যেন সরে গেলো রাস্তার যে দিকটায় খাদ থাকার কথা, সেদিকে। সম্ভবত কোনো বৃদ্ধ ছিল। মানুষকে স্পষ্ট চেনা না গেলেও, সামনে থাকা একটা অবয়বকে বোঝা যায়। আর তার ফলেই
সেই কুয়াশার মধ্যেও লোকটার পিঠের কুঁজটা গোপালের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এড়ায়না।

বৃদ্ধ কিছুক্ষণ ধরেই ওর পেছনে আসছিল কিন্তু গোপাল অত গুরুত্ব দেয়নি। ভোরের আলো ফুটে গেছে। পাহাড়ের কর্মঠ মানুষগুলো একজন দু’জন করে নিজেদের কাজে বের হওয়া শুরু করছে।
গোপাল ততক্ষণে নিজের বাড়ির গেটে পৌঁছে যায়। গলার ব্যথাটা আর অনুভূত হয় না। সে বাড়ি ফিরে সোজা ঘুমোতে চলে যায়। সারা রাত মজা লুটেছে, এখন তার শরীর খুব ক্লান্ত। আবার রাতে যাবে তার কাছে। এখন একটু বিশ্রামের প্রয়োজন।

সে রাতে গোপালের আর বাইরে বের হওয়া হয়না। যার সাথে অবৈধ সম্পর্কে নিজের জীবনের মজা নিচ্ছিল তার স্বামী ব্যবসার কাজ শেষ করে সময়ের পূর্বেই ফিরে এসেছে। ফলে আরো কিছুদিন অপেক্ষা করা ছাড়া উপায় ছিল না। কিন্তু গোপালের সেই অপেক্ষা আর শেষ হয়না! দু’দিন পরে হঠাৎ গোপালের জ্বর হয়। এরপর শুরু হয় মাথায় অমানুষিক ব্যথা এবং মাত্র দু সপ্তাহের মধ্যেই ব্রেন ডেড! ডাক্তাররা সন্দেহ করে ইনফেকশন থেকে ব্রেন ডেড হয়ে গোপাল মারা যায়। কিন্তু এরপর গোপালের পরিবারের মধ্যে ঘটতে থাকে এক অদ্ভুত ঘটনা!

**

“কি বলছেন স্যার? খুন! তাও সিরিয়াল কিলিং-এর ঘটনা!”

কনস্টেবল অখিল দেবনাথকে একবার দেখে নিয়ে ইন্সপেক্টর রুদ্রনীল বাগচী আবার তার ঔষধের কৌটো হাতে নিয়ে নাড়া চাড়া করতে থাকেন। ঔষধটা খাবার সময় হয়ে এসেছে। কিন্তু সেটা খেলে মুকুন্দ বাবু আর আসবেন না। অথচ ওই মানুষটার খুব প্রয়োজন। ওঁর আই. কিউ আর পাঁচটা লোকের থেকে বেশি! অথচ সাইক্রাইটিস্ট রাস্তোগি রুদ্রনীলকে সাবধান করে দিয়েছেন, ইচ্ছাকৃত ওষুধ বন্ধ করে যদি নিজের আরেক রূপ মুকুন্দ দাসকে বারবার ডেকে আনেন তাহলে হয়তো একটা সময় রুদ্রনীলেরই কোনো অস্তিত্ব থাকবেনা!

রুদ্রনীল বাগচী মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগছেন। তিনি নিজে একা কোনো কেসই সল্ভ করতে পারেন না। আর তাই তার আরেক রূপ মুকুন্দ দাস তাকে সেই কেস সল্ভ করতে সাহায্য করেন। ব্যাপারটা সাধারণ মানুষের কাছে অবিশ্বাস্য হলেও, চিকিৎসা শাস্ত্রে এমনটা হওয়া খুবই সাধারণ।

রুদ্রনীলের ভাবনায় বাধা পরে। কনস্টেবল অখিল তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে। সে মুকুন্দ দাস, সাইক্রাইটিস্ট রাস্তোগি এদের কথা জানে না। কলকাতায় পোস্টিং হওয়ার পর থেকে অখিল তাঁর আন্ডারেই কাজ করে, তবে ওই থানা আর কাজের সূত্রেই দু’জনের যত কথা বার্তা। এর বাইরে নিজের একাকী জীবনে কি ঘটছে তা রুদ্রনীল কাউকে বলেন না। ছোটবেলায় অনাথ আশ্রমে বড় হয়ে ওঠা এই দুঁদে অফিসার যে এম.পি.ডি. অর্থাৎ মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগছেন আর তার সেই দ্বিতীয় অবতারই হল মুকুন্দ দাস সেটা উনি নিজে
এবং সাইক্রাইটিস্ট রাস্তোগি ছাড়া কেউ জানে না। তবে রাস্তোগির দেওয়া ওষুধগুলো কন্টিনিউ করলে মুকুন্দ বাবুর আবির্ভাব ঘটনা ঠিকই কিন্তু তিনিই তো রুদ্রনীলের সমস্ত জটিল কেসগুলোর সমাধান করেন। সোজা কথায়, অনাথ আশ্রমে বড় হওয়ার দরুন তার মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ে এবং উৎপত্তি হয় মুকুন্দ দাসের যে কিনা তাকে ছেলের মত ভালোবাসেন আবার চাকরি জীবনেও সমস্ত কেস সল্ভ করে দেন। আসলে রুদ্রনীল নিজেই সব করে কিন্তু তার মাথা সেটা মানতে চায়না। তাই তার মনে হয় মুকুন্দ দাসই কেস গুলোর জট ছাড়িয়ে দেন। এই যেমন দু’দিন আগে হঠাৎ খবরের কাগজে চোখ বোলাতে গিয়ে রুদ্রনীলের দৃষ্টি আটকে পড়ে একটি সমীক্ষায়। যেখানে বলা হয়েছে, কলকাতায় দিন দিন ব্রেন ডেথ-এ মানুষের অনেক মৃত্যু সংবাদ চিকিৎসকদের ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খবরটা প্রাথমিক দৃষ্টিতে তেমন কিছু না হলেও রুদ্রনীলের মনে হয় কোথায় যেন সে এই ব্রেন ডেথ নিয়ে একটি খবর পড়েছিল। সেদিন তার ভাবনায় ছেদ পড়ে যখন সে দেখে মুকুন্দ দাস সাত মাস পুরোনো একটা কাগজ এনে টেবিলের উপর সেটা মেলে ধরেন। যদিও সেখানে তৃতীয় কোনো ব্যক্তি উপস্থিত থাকলে বুঝতে পারতো, রুদ্রনীল নিজেই খবরের কাগজটি বের করেছে কিন্তু তার অসুস্থ মস্তিস্ক তাকে যা বোঝায় সে সেটাই বোঝে। অর্থাৎ মুকুন্দ দাসের পারদর্শিতা আসলে রুদ্রনীলেরই কাজ!

সে যাই হোক, সেদিন কাগজটায় লেখাছিল একটি পরিবারের দুর্ভাগ্য জনক পরিণতির কথা। প্রকৃতির এমন পরিহাস যে একটি আপাতদৃষ্টিতে সুখী পরিবারের সকল মানুষ অর্থাৎ স্বামী, স্ত্রী এবং আঠারো বছরের ছেলে তিন জনেরই ব্রেন ডেথ হয়! ঘটনাটা নিঃসন্দেহে বিরল তাই কার্শিয়াঙ তো বটেই দক্ষিণ বঙ্গের খবরের কাগজে অব্দি সেই ঘটনা ছাপা হয়। আর তাই কলকাতার ব্রেন ডেথ এবং সেই পরিবারের ডেথ গুলোকে মনে মনে রুদ্রনীল বাগচী কানেক্ট করেই অখিলকে সিরিয়াল কিলিংয়ের সম্ভাবনার কথা জানায়। কিন্তু অখিল অবাক হয়। সে কার্শিয়াঙের ঘটনাটা জানেই না আর ব্রেন ডেথ কি করে খুন হতে পারে সে বিষয়ে তার মনে যথেষ্ট ধোঁয়াশা আছে। তাই রূদ্রনীল শেষে ঠিক করলেন মুকুন্দ দাসকেই আরো একবার ফিরিয়ে আনতে হবে।

রুদ্রনীল বাগচী ঔষধটা আর খেলেন না। অখিলকে বললেন,

“কার্শিয়াং-এ একটি পরিবারের এক অদ্ভুত গল্প মাস কয়েক আগে খবরের কাগজে পিড়েছিলাম।”

”কি গল্প স্যার?”

“সেখানে গোপাল তামাং নামের এক যুবকের
ব্রেন ডেথ হয়ে মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই তার কাকাতো দাদারও একই ভাবে মৃত্যু হয় এবং এর কিছুদিন পরে দাদার স্ত্রী এবং সন্তানও মারা যায় সেই একই ভাবে !”

“সে কি করে সম্ভব স্যার? যতদূর জানি ব্রেন ডেথ তো কোনো ছোঁয়াচে রোগ বা জীবাণুর সংক্রমণ না, যে কিছুদিনের ব্যবধানে পরিবারের সবার মধ্যে ছড়িয়ে পরবে!”

“আমারও তখন খটকা লাগে তাই একটু খোঁজ খবর নিয়েছিলাম। তবে ওখানের পুলিশের থেকে যা ইনফরমেশন পেলাম তাতে খুনের কোনো তথ্য উঠে আসেনি। ডাক্তারের রিপোর্ট ওখানের পুলিশ আমাকে ফ্যাক্স করেছিল। সেটাও ভুয়ো বলে মনে হয়নি।”

“তাহলে কি আপনার মনে হচ্ছে বর্তমানে আমাদের শহরের ব্রেন ডেথ-এ মৃত মানুষগুলোর সাথে কার্শিয়াং-এর ওই পরিবারের মৃত্যুর কোনো যোগ সূত্র আছে?”

”সঠিক বলতে পারিনা। কিন্তু নিজের মত করে একটু তদন্ত করা প্রয়োজন। এমন না হয়, এক অতীব চালাক খুনি আমাদের চোখের সামনে একটার পর একটা খুন করে চলেছে আর পুলিশকে বোকা বানাতে সক্ষম হয়ে মনে মনে উল্লসিত হচ্ছে।

**

রুদ্রনীল সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে বসে ভাবছেন, ব্রেন ডেড-এ মৃত্যুর ঘটনাগুলো হয়তো সাধারণ ঘটনাই। তিনি শুধু শুধু বেশি ভাবছেন। এমন সময় দরজায় কলিং বেল বাজলো। তাহলে কি মুকুন্দু দাস এলো!
রুদ্রনীল গিয়ে দরজা খুললেন। কিন্তু না, মুকুন্দবাবু নয়, অখিল এসে হাজির হয়েছে!

“কি ব্যাপার অখিল? তুমি এই সময় এখানে!”

“হ্যা স্যার। আপনার কথা মত শিলিগুড়ির টিকিট কেটে এনেছি। ট্রেনের টিকিট আনতে যাচ্ছি হঠাৎ ডি. এস. পি. স্যার থানায় এসে বললেন আপনাকে প্লেন-এর টিকিট করে দিতে। আপনি নাকি উনার সাথে ব্রেন ডেথ কেস নিয়ে আলোচনা করেছেন,
আর তখনই উনার মনে হয়েছে যত দ্রুত সম্ভব আপনার কার্শিয়াং পৌঁছনো দরকার। তাই প্লেনের টিকিট কাটা।”

রুদ্রনীল কিছু বলতে গিয়ে চুপ করে থাকেন। তিনি নিজে আজ সারা দিনে না তো ডি. এস. পি. স্যারের সাথে কথা বলেছেন আর না তো অখিলকে কোনো টিকিট কাটতে বলেছেন! তার মানে মুকুন্দ দাস ফিরে এসেছেন এবং তিনিই এই কাজগুলো করেছেন। আর সবাই ভাবছে রুদ্রনীল করেছেন। সত্যি সত্যি কোনো খুনের ঘটনা যদি হয়ে থাকে এবং তার সমাধান তিনি করতে পারেন, তাহলে বরাবরের মত মুকুন্দ বাবু সব করলেও নাম হবে রুদ্রনীলের।

অখিলকে বিদায় দিয়ে রুদ্রনীল শুয়ে পড়েন। পর দিনই তাকে শিলিগুড়ি যেতে হবে। বলাই বাহুল্য বিনা টিকিটে মুকুন্দ বাবুও সঙ্গে যাবেন।

**

বাগডোগরা এয়ারপোর্টে ফ্লাইট থেকে নেমে রুদ্রনীল বাগচী একটা সাফারি ভাড়া করে নেয়। এই ধরণের অনেক গাড়ি এয়ারপোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। কার্শিয়াং, দার্জিলিং, গ্যাংটক এই সমস্ত পাহাড়ী অঞ্চল গুলো দেখতে বছরের প্রায় সব সময়ই টুরিস্টের আনাগোনা লেগেই থাকে। যারা বিত্তবান তারা এয়ারপোর্ট থেকেই গাড়ি ভাড়া করে নেয়। রুদ্রনীল বাগচীর অবশ্য টাকা ওড়ানোর কোনো রকম ইচ্ছেই নেই। উনার মিশনটা গোপন রাখার উদ্দেশ্যেই এই ব্যবস্থা।

বাগডোগরা থেকে শিলিগুড়ি ঢোকার মুখে গাড়ি বাঁ দিকে ঘুরে সোজা চলতে লাগলো। শুকনার জঙ্গল পেরিয়ে সেবক থেকেই শুরু হয়ে যায় পাহাড়ে চড়া। যতই উপরে উঠছে পাহাড়ের সৌন্দর্য্যে রুদ্রনীল যেন অবাক হয়ে যাচ্ছেন। তিনি কখনো পাহাড় দেখেন নি। একদিকে পাহাড়ের গা বেয়ে কত নাম না জানা গাছের জঙ্গল, আরেক দিকে খাদ। নিচে সবুজ তিস্তা নদী। আর কিছুদূর পর পর ছোট ছোট ঝর্ণা পিচ ঢালা রাস্তা ভিজিয়ে লাফিয়ে পড়ছে পাশের খাদে।
এই দৃশ্য দেখতে দেখতে হঠাৎ বিকেল ফুরিয়ে ঝুপ করে সন্ধ্যা নামে পাহাড়ের বুকে। তখনও উঁচু চূড়ায় সোনালী আলো ঝলমল করছে। সে এক নৈসর্গিক দৃশ্য! এরপর সব অন্ধকার।

রুদ্রনীল যখন কার্শিয়াং পৌঁছলেন তখন রাত ৮টা। কিন্তু মনে হয় যেন গভীর রাত। সে সময় হোটেল থেকে আর না বেরিয়ে পরদিন খোঁজ খবর নেবেন বলে ঠিক করেন। লোকাল পুলিশের সাথে একবার দেখা করা প্রয়োজন।

**

“এগুলো কি?”

“এই হল গোপাল তামাং-এর ঠিকানা। আর এই হল সেই বস্তু যা কিনা সবার চোখের সামনে থেকেও কেউ আসল ব্যাপারটা বুঝতে পারেনি।”

”আপনি এগুলো কোথা থেকে জোগাড় করলেন?”

“কোথা থেকে আবার? কাল রাতে পুলিশ স্টেশন-এ গিয়েছিলাম।”

“আপনাকে ওরা এইসব এভিডেন্স-এর ফটো দিয়ে দিলো?”

“হ্যা কারণ এখানে ওই তমাল নামের ছেলেটার কলকাতা থেকে বদলি হয়েছে। আমাকে দেখেই সেলাম ঠুকে আমি যা যা জানতে চাইলাম সব বলে দিলো।”

রুদ্রনীল জানেন মুকুন্দ বাবুর কোনো অস্তিত্বই নেই। নিজের আরেক রূপ যাকে তিনি নিজের থেকে উন্নত মানেন তাকেই তিনি হ্যালুসিনেট করেন। অথচ তাঁর মন মানতে চায় না। এখন মুকুন্দ বাবুর কথায় তিনি বুঝতে পারেন যে, রাতে রুদ্রনীল একাই গিয়েছিলেন পুলিশ স্টেশনে এবং কলকাতায় তাঁর থানা থেকে বদলি হওয়া তমাল নন্দী তাঁকে দেখেই সব বলে দিয়েছে।

এবার তিনি টেবিলের উপরে রাখা নাম গুলো দেখে নেন।

“গোপাল তামাং, মৃত কারণ ব্রেন ডেড। তার দাদা রূপম তামাং, বৌদি শ্রেয়া তামাং এবং রূপম তামাং ও শ্রেয়া তামাং-এর এক মাত্র পুত্র কুশ তামাং, সকলের মৃত্যু ব্রেন ডেড!”

কথাগুলো বিড়বিড় করে মুকুন্দ দাসের দেওয়া সেই ছবিতে রুদ্রনীলের চোখ যায়। একটা লম্বা কন্টেনারের ছবি। সম্ভবত কোনো কেমিক্যাল বা ওই জাতীয় জিনিস এর মধ্যে প্রিসার্ভ করে রাখা হয়। এই জিনিসটা পুলিশ গোপাল তামাং আর রূপম তামাংয়ের বাড়ির আশেপাশে পেয়েছে। মোট চারটে এমন কন্টেনার পাওয়া যায়। তবে পুলিশ বোঝেনি সেগুলোর ব্যবহার কেন করা হয়েছিল। জিনিসগুলো নিয়ে কোনো সন্দেহই পুলিশের হয়নি। মুকুন্দ দাস বলেন,

“যদি তখনই কন্টেনারগুলোর ল্যাব টেস্ট করানো হতো, তাহলেই বোঝা যেত, এগুলো খুন কিনা।”

“আপনি নিশ্চয়ই কিছু আঁচ করতে পেরেছেন।”

রুদ্রনীলের কথায় মুকুন্দ দাস হাসেন। এরপর বলেন,

“একবার রূপম তামাংয়ের বাড়ির কাছাকাছি কিছু মানুষকে একটু জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। আর তুমি অখিলকে ফোন করে বলো সমস্ত হাসপাতাল গুলোয় একটু খোঁজ নিয়ে দেখতে, ব্রেন ডেড কেস গুলোয় রোগীর উপসর্গ কি ছিল। আমাদেরও একবার এখানের হাসপাতালে যেতে হবে। তুমি তমালকে একবার ফোন করে নিও। ওর ফোন নাম্বার তোমাকে না জিজ্ঞেস করেই তোমার মোবাইলে সেভ করে দিয়েছি।”

**

“কে! ওই শ্রেয়া তামাং? অমন চরিত্রহীনা মেয়ে মানুষের ওই পরিণতি হয়।”

রূপম তামাং-এর বাড়ির আশেপাশে খোঁজ খবর নিতে গিয়ে, তার প্রতিবেশী এক বাঙালি ভদ্র মহিলার থেকে যা জানা গেলো তাতে রুদ্রনীলের তেমন কোনো সন্দেহ না হলেও মুকুন্দ বাবুর মুখে একটা খুশীর ভাব প্রকাশ পায়। রুদ্রনীল সেই মহিলাকে জিজ্ঞেস করলেন,

“উনারা কেউ বেঁচে নেই, তাই বুঝি যা ইচ্ছে তাই মন গড়া কথা রটাচ্ছেন?”

মহিলা এবার তেলে বেগুনে জ্বলে উঠে বললেন,

“মিথ্যে কেন রটাবো? এখানে যাকে জিজ্ঞেস করবেন সেই বলবে, গোটা পরিবারটি নোংরা ছিল। শ্রেয়ার বর রূপম বাড়ি থাকতে শ্রেয়ার এক বন্ধু এখানেই পড়ে থাকতো। আর রূপম বাইরে গেলে, দেওর গোপাল আসত রাতের অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে আর বেরিয়ে যেত ভোরের কুয়াশার আড়ালে নিজেকে লুকিয়ে। ভাবতো কেউ দেখতে পারছে না। কিন্তু আমার চোখকে ফাঁকি দেওয়া অত সহজ না।”

মুকুন্দবাবু রুদ্রনীলকে বলেন,

“ওকে জিজ্ঞেস করো শ্রেয়ার সেই বন্ধুর নাম কি?”

মহিলা যেন সত্যি সি সি টি ভি! শুধু নামই না, শ্রেয়া তামাং-এর সেই বন্ধুর ফোন নম্বর এমনকি সে কোথায় থাকে, কি কাজ করে, সব বলে দিলেন! রুদ্রনীল ফিরে যাচ্ছিলেন। সেই মহিলা তাকে থামিয়ে আবার বললেন,

“শেষের দিকে নোংরামোর সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল। এক দিন ভোরে তো দেখি, বাড়ি থেকে তিন জনই মানে গোপাল, রূপম আর শ্রেয়ার বন্ধু এক এক করে বেরোচ্ছে। প্রথমে গোপাল, তার পেছনে শ্রেয়ার বন্ধু পলাশ আর একদম শেষে তার স্বামী রূপম। ছি ছি, শেষে কিনা পুরো রাত ৩টে পুরুষ মানুষের সাথে…”

মহিলা বলে চলেছেন কিন্তু মুকুন্দ দাস আর দাঁড়ায় না। রুদ্রনীলকে নিয়ে প্রথমে শ্রেয়ার বন্ধুর বাড়ি পৌঁছয় এরপর সেখান থেকে রুদ্রনীল কলকাতায় কিছু দরকারি টেলিফোন করে, ওরা লোকাল হাসপাতালে পৌঁছয়। সেখানে পৌঁছে চিন্তিত মুখে রুদ্রনীল হাসপাতালে খোঁজ নেওয়া শুরু করেন। গোপালের তেমন কোনো উপসর্গের কথা না জানা গেলেও শ্রেয়া, রূপম এবং কুশের ক্ষেত্রে মৃত্যুর কিছুদিন আগে জ্বর এসেছিল বলে জানা যায় এবং জ্বরের কিছুদিন পরেই তাদের মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা শুরু হয়। ডাক্তাররা কোনো ইনফেকশন হয়েছে বলে ধারণা করে কিন্তু সমস্ত টেস্ট করার পূর্বেই হঠাৎ করে তাদের মৃত্যু ঘটে।

বিকেলে অখিল ফোন করে জানায় গত কয়েক মাসে কলকাতায় যত গুলো ব্রেন ডেড এর ঘটনা ঘটেছে তার মধ্যে অন্তত ৩৫ জনের জ্বর, মাথা ব্যাথা ছিল।
তাদের মৃত্যুর পর ডাক্তারদের মনে হয়েছে কোনো ইনফেকশন থেকেই ওই মানুষগুলোর মস্তিস্ক হঠাৎ মৃত হয়ে যায়। কিন্তু তাতে কোনোরকম খুনের অ্যাঙ্গেল বা সন্দেহ করার মতো কিছুই ছিল না। এই পয়েন্টটা শোনার পরই রুদ্রনীল কলকাতায় ফিরে আসেন । কলকাতায় এসে পুলিশের ইনফর্মারদের অ্যাকটিভ করা হয়। জানা যায়, নিষিদ্ধ পল্লীর মেয়েরা বা রিকশা চালক অথবা ট্রেনে বাসে প্রতিদিন যাতায়াত করে এমন মানুষদের শরীরেই সেই ইনফেকশন হয়ে তারা ব্রেন ডেড এর কারণে হঠাৎ মারা যায়।

রুদ্রনীল অখিলকে একটি ফোন নাম্বার দিয়েছিলেন।
সেই নাম্বারটি অ্যাকটিভ না থাকলেও সেটা যেই ফোনে ব্যবহৃত হতো সেই ফোনে, অন্য কোন নম্বর বর্তমানে সচল আছে তা জেনে, সেই নতুন নাম্বারকে ট্র্যাকিং-এ ফেলার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

**

কলকাতার রাস্তায় ফুটপাথও কিছু মানুষের বাসস্থান! দারিদ্রতার এ এক ভয়ঙ্কর রূপ যেখানে শতাধিক মানুষ রাতে রাস্তার ধারেই ঘুমিয়ে পরে। কখন যে কোনো অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি, প্রচন্ড গতিতে ছুটে এসে ঘুমের মধ্যেই তাদের জীবনের সমস্ত সংঘর্ষের পরিসমাপ্তি ঘটিয়ে দেবে, তা তারা নিজেও জানে না। এই ফুটপাথ নিয়েও তাদের সংঘর্ষ করতে হয়। এই যেমন ওই ঘুমিয়ে থাকা মানুষগুলোর পাশে হঠাৎ কুঁজো মত এক নতুন আগন্তুক এসে দাঁড়িয়েছে। সে ধীরে ধীরে হাটু মুড়ে বসে, সম্ভবত সেই রাতটা ওখানে ঘুমোতে চায়। এরপর আরো এক রাত, এমন করে ফুটপাথের ওই জায়গাটুকুর দখল হবে তার। কিন্তু নতুন আর একজনকেও এই জায়গা ছেড়ে দেওয়া যায়না। শুয়ে থাকা মানুষগুলোর মধ্যে যার পাশে সেই আগন্তুক এসে দাঁড়িয়েছিল সেই ব্যক্তি হঠাৎ উঠে বসে এবং আগন্তুককে তাড়িয়ে দিতে যায়। কিন্তু আগন্তুক ততক্ষণে তার পিঠে হাত দিয়ে কি একটা বের করে এনে ফুটিয়ে দিয়েছে হত দরিদ্র মানুষটার শরীরে।

সামান্য একটা পোকা কামড়ানোর মত ব্যাথা অনুভূত হয় লোকটার কিন্তু লোকটা বেজায় চোটে গিয়ে বাকিদের ডেকে তোলে। সেই আগন্তুক পালানোর চেষ্টা করে কিন্তু মানুষগুলো তাকে ঘিরে ধরে। লোকগুলোর কেউই ফুটপাথটা আরেকজনের সাথে ভাগ করতে চায়না। তার উপর সেই অতর্কিত আক্রমণের ফলে তারা সমবেত হয়ে আগন্তুককে মারতে যাচ্ছিল এমন সময় পুলিশের গাড়ি এসে দাঁড়ায়! গাড়ি থেকে নেমে আসে ইন্সপেক্টর রুদ্রনীল বাগচী(ক্রাইম ব্রাঞ্চ) এবং কনস্টেবল অখিল। বলাই বাহুল্য সবার চোখের আড়ালে থেকে মুকুন্দ দাসও এসে দাঁড়িয়েছে রুদ্রনীলের পাশে। রুদ্রনীল সেই আগন্তুককে পলাশ বলে সম্বোধন করতে যাচ্ছিলেন কিন্তু মুকুন্দ বাবু ভুলটা ধরিয়ে দিলেন। তিনি ইন্সপেক্টর বাগচীর কানে কানে বললেন,

“ও পলাশ না। পলাশের বন্ধু অভীব্রত পাল। বাঙালি ছেলে। এন. আই. ভি. পুনেতে কর্মরত। বাকিটা পরে বলছি। একে গ্রেফতার করো এবং ওই লোকটিকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করো। না হলে, ওকেও ব্রেন ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচানো যাবে না।”

**

লকআপে ইন্টারোগেট করার আগে মুকুন্দবাবু অভীব্রতর বিষয়ে যা যা ইনফরমেশন তার খবরীদের থেকে জেনেছিলেন সেগুলো রুদ্রানীলকে বলে দেন। এরপরের গল্পটা রুদ্রনীল নিজেই মনে মনে গুছিয়ে নিয়েছেন।

“তোমার নাম অভীব্রত পাল? পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউশন অফ ভাইরোলজিতে কাজ করো?”

“হ্যা।”

“পিঠে যেটা কুঁজ মনে হয় সেটা আসলে একটা কন্টেনার?”

“হ্যা।”

“কোন ভাইরাস সুরক্ষিত রাখো ওর মধ্যে?”

অভীব্রত এবার চুপ করে থাকে। অখিল পাশ থেকে চেঁচিয়ে ওঠে,

“স্যারের প্রশ্নের উত্তর দে। না হলে মেরে তোর সব হাড় ভেঙে দেব।”

রুদ্রনীল নিজেই শান্ত গলায় বলতে থাকেন,

“এইচ. এস. ভি. ভাইরাস থেকে এনকেফ্যালাইটিস হতে পারে এবং তার থেকে ব্রেন ড্যামেজ বা ব্রেন ডেথ?”

অভীব্রত উত্তর দেয়,

“হুম। সবই দেখি জানেন!”

“কিন্তু সেটার কোনো গ্যারান্টি নেই তাহলে কি করে সিওর হলে ব্রেন ডেথই হবে?”

এবার অভীব্রতর মুখে শয়তানি হাসি খেলে যায়। সে নিজের মহত্ত্ব প্রকাশ করতে গিয়ে রহস্যের সব জটই খুলে দেয়।

“এইচ.এস.ভি ওয়ান এবং টু নিয়েই আমরা এতদিন জানতাম কিন্তু আমি পুনেতে রিসার্চ-এর সময় নতুন
এইচ.এস.ভি. থ্রি-এর আবিষ্কার করতে সক্ষম হই। সিওর ছিলাম না, এই ভাইরাস কি করতে পারে তা নিয়ে। তাই পলাশকে দিয়েছিলাম। জানেন ও ওই শ্রেয়াকে খুব ভালোবাসত। কিন্তু রূপমের সাথে বিয়ে হয়ে যাওয়ায় ওর মনটাই ভেঙে যায়। শ্রেয়া কিন্তু ওর সুযোগ নিতে কখনোই ছাড়েনি। গোপালের সাথে অবৈধ সম্পর্কের থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলো, তখন পলাশকে বলল গোপালকে শেষ করে দিতে। আর আমার বন্ধু অমনি রাজি হয়ে গেলো! আমি তখন সুবর্ণ সুযোগ পাই আমার আবিষ্কারের পরীক্ষার। পলাশ এক কুয়াশা মাখা ভোরে গোপালের শরীরে ঢুকিয়ে দিলো এইচ.এস.ভি থ্রি-কে। ব্যাস, চারদিনের মাথায় জ্বর আর চোদ্দদিন পরে মৃত্যু!”

অভীব্রত থামলো। অখিল অবাক হয়ে শুনছিল। রুদ্রনীল এবার বাকিটা বললেন,

“সেই ভোরে রূপম তামাং ফিরে এসে দেখে বাড়ি থেকে তার ভাই গোপাল এবং তার পিছু পিছু পলাশ বেরিয়ে যাচ্ছে। তিনি ওদের পিছু নিয়ে পলাশকে গোপালের শরীরে ইনজেকশন ফোটাতে দেখেন। ফলে পলাশ একদিন সুযোগ বুঝে রূপমকেও মেরে ফেলে, সেই একই ভাবে। শ্রেয়াকেও তার অসহ্য লাগতে থাকে তাই তাকে এবং তার ছেলেকেও ছাড়ে না। এরপর তোমরা দু’জন এখানে চলে এসে শুধুমাত্র খুন করার নেশায় একটার পর একটা খুন করে চলেছ। পলাশ কোথায় অভীব্রত?”

অভীব্রত এতগুলো খুনের দায় বিনা দ্বিধায় নিজের উপর নিয়ে নিলেও পলাশের কোনো খোঁজ দেয়নি। সে যে মানসিক ভাবে অসুস্থ তা তার এই হঠকারী ব্যবহারেই বোঝা যায়। সে ঠিক করেছে পলাশের খবর সে দেবে না। পুলিশ তাকে খুঁজে নিক। এটা তার পুলিশকে ছোড়া এক প্রকার চ্যালেঞ্জ। পুলিশ পলাশের ফোন থেকেই অভীব্রত অব্দি পৌঁছয় কিন্তু রুদ্রনীল বাগচী এমনকি তার থেকে বেশি আই.কিউ সম্পন্ন তার অপর সত্ত্বা মুকুন্দ দাসও কোনোদিন পলাশকে জীবিত বা মৃত খুঁজে পায়নি।

লকআপ থেকে বেরিয়ে এসে অখিল জানতে চায়,

“স্যার আপনি কি করে এত কিছু জানলেন? মৃত্যুগুলোতো সাধারণই মনে হচ্ছিল অথচ আপনি সেখান থেকে খুনের অ্যাঙ্গেল এবং খুনিকেও ধরে ফেললেন!”

“একজনকে ধরেছি, আরেক জন তো এখনো অধরা।”

“সে যাই হোক, এই বা কম কি?”

রুদ্রনীল মুকুন্দ দাসকে আর দেখতে পেলেন না। অনিচ্ছাকৃত ভাবেই সমস্ত ক্রেডিট নিজের নামেই নিতে হল। মুকুন্দ দাসের কথা বলে তিনি নিজেকে পাগল প্রতিপন্ন করতে চান না।

“কার্শিয়াঙের ঘটনাটা আগেই পড়েছিলাম হঠাৎ চোখে পড়লো সেই সমীক্ষা যেখানে বলা হয়েছে
গত কয়েকমাসে কলকাতায় এতগুলো মানুষ ব্রেন ড্যামেজ হয়ে মারা গেছে। একটা খটকা লাগলো এরপর কার্শিয়াং গিয়ে জানতে পারলাম শ্রেয়া, রূপম, গোপাল এবং পলাশের কথা। কিছু কিছু ঘটনা তখনই পরিষ্কার হয়ে গেল। পলাশের পুরোনো নাম্বারটা বদলে ফেললেও সে মোবাইল ফোনটা বদলায়নি। ফলে সেই মোবাইল ট্র্যাক করে তার নতুন নাম্বার পেয়ে গেলাম। এরপর টেলিফোন অফিস থেকে আমার এক খবরী খোঁজ দিলো, পলাশের নাম্বারের সাথে আরো একটি নাম্বার একই স্থানে বেশিরভাগ সময় অ্যাকটিভ থাকে। জানতে পারলাম সে অভীব্রত, পলাশের বন্ধু এবং ভাইরোলজি ডিপার্টমেন্টে কর্মরত। এরপর একটু পড়াশোনা, ব্যাস কেস সল্ভড। অখিল অবাক হয়ে শুনলো। সত্যি তো, এ যেন জলভাত! সে চেষ্টা করলেও হয়তো সমাধান করতে পারতো। শুধু প্রয়োজন ছিল, রুদ্রনীল বাগচীর মত আরেকটু উন্নত মস্তিষ্কের।

(রুদ্রনীল বাগচীর এটা দ্বিতীয় গল্প তাই তার এবং মুকুন্দ দাসের বিষয়ে একটু বিস্তারিত ভাবে বলা হয়েছে)

Previous articleদিন যে গেছে
Next articleমোহিনী